নিজস্ব প্রতিবেদক : ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আল্লামা ইমাম হায়াত বলেন,
জয় বাংলা ”- রাষ্ট্রীয় শ্লোগান হিসেবে সঠিক নয়।
রাষ্ট্রীয় শ্লোগান হিসেবে ” জয় বাংলা ” বলা ভূল ও অযৌক্তিক। জয় বাংলা রাষ্ট্রীয় শ্লোগান হতে পারেনা, কোনো দলের দলীয় শ্লোগান হতে পারে।
যে কোনো দল তাদের বিশ্বাস আদর্শ মোতাবেক যে কোনো শ্লোগান দিতে পারেন কিন্তু সেটা রাষ্ট্রের সবার জন্য সঠিক ও গ্রহণযোগ্য না ও হতে পারে।
তিনি বলেন,
বাংলা একটা ভাষার নাম, বাংলা কোনো রাষ্ট্রের নাম নয়। বাংলা বলতে পৃথিবীতে কোনো রাষ্ট্র নাই।
সংবিধানে এই দেশ এই রাষ্ট্রের নাম বাংলাদেশ।
এছাড়া- ” জয় বাংলা ” – বস্তুবাদি জাতীয়তাবাদ ভাষাগত জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক গোষ্ঠীবাদি রাজনীতির ধারক একটা দলের দলীয় শ্লোগান।
একাত্তরে পাকিস্তানি জালিম শাসকগোষ্ঠীর খুনি বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকারদের হত্যাযজ্ঞ থেকে মুক্তি সংগ্রামের জয়বাংলা আর এখনকার জয়বাংলা এক নয় ভিন্ন বিপরীত।
সময় ও পরিস্থিতির কারনে এবং পাত্র ও লক্ষ্যের কারনে শব্দ উচ্চারণ এক হলেও অনেক শব্দের ভাব পাল্টে যায়, অর্থ ও মোটিভ এবং এফেক্ট পাল্টে যায়।
শুধু জয় বাংলাদেশ বললেও রাষ্ট্রগত জাতীয়তাবাদ হয়ে যাবে, সাথে জয় বিশ্ব মানবতা বললে শুদ্ধ হবে এবং নিছক রাষ্ট্রীয় জাতীয়তাবাদ হবে না।
তিনি আরও বলেন,
ঈমানদারের সব কিছুই কলেমার চেতনা ও অখন্ড মানবতার চেতনা ভিত্তিক হতে হবে।
মুসলিম না হলেও মানুষ হলেও সব কিছু মানবিক চেতনা- মানবিক বিবেকবোধ- মানবাধিকার ভিত্তিক হতে হবে।
ইমাম হায়াত আরও বলেন,
প্রাকৃতিক ভাবেই সব মানুষ এক জাতি। মানবতা অখণ্ড, আল্লাহ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দান হিসেবে রাষ্ট্র সবার- সম্পদ সবার- দুনিয়া সবার সব মানুষের এবং প্রতিটি মানুষ জন্মগত বিশ্বনাগরিক।
প্রাকৃতিক ভাবেই এ দুনিয়ার সব মানুষ ই আদিবাসী,
কেউ কোথাও অভিবাসী নন।
কোনো মানুষ অবৈধ নয়, বর্ডার অবৈধ।
একক ধর্মের নামে বা একক জাতীয়তাবাদের নামে একক গোষ্ঠীর সব রাষ্ট্র অবৈধ- অন্যায় -অবিচার -কারাগার- মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। জীবনের সত্য ও মানবাধিকার স্বীকার করলে মানবিক ভ্রাতৃত্ব ভিত্তিক অখন্ড মানবতা স্বীকার করতে হবে।
জীবন ও মানবাধিকার বিশ্বাস করলে জীবন ও জগতের দয়াময় স্রষ্টা ও স্রষ্টার মহান রাসুল প্রদত্ত সব মানুষের নিরাপত্তা-স্বাধীনতা-অধিকার- মানবিক সাম্য- বিশ্ব সম্পদে সব মানুষের মালিকানা ও সবার প্রাকৃতিক বিশ্বনাগরিকত্ব ভিত্তিক অখন্ড মানবতার অখন্ড দুনিয়া মুক্ত জীবনের মুক্ত দুনিয়া খেলাফতে ইনসানিয়াত স্বীকার করতেই হবে, নাহয় জীবন ও মানবতা অস্বীকার হবে, দয়াময় স্রষ্টার কর্তৃত্ব ও বিধান লংঘন হবে, মিথ্যা – জুলুম- মুলুকিয়তের আঁধারে জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে।
অখণ্ড মানবতার প্রাকৃতিক মানবিক ঐক্য ও বন্ধনকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি আরও বলেন,
সর্বজনগ্রহনযোগ্য স্লোগান
দয়াময় স্রষ্টার করুণাধন্য হোক বাংলাদেশ ও সকল দেশ সকল মানুষ
May Allah bless Bangladesh & mankind all,
বা- ‘‘ জয় বাংলাদেশ ’’
বা- শুভ বাংলাদেশ শুভ বিশ্ব মানবতা,
বা-বাংলাদেশ দীর্ঘজীবি হোক,
বা-বাংলাদেশ মানবতার রাষ্ট্র হোক,
বা- বাংলাদেশ নিরাপদ হোক,
বা- বাংলাদেশের কল্যাণ হোক,
বা- স্রষ্টার করুনা হোক বাংলাদেশের জন্য,
বা- শান্তিময় হোক বাংলাদেশ, বা- নিরাপদ হোক বাংলাদেশ,
বা- স্রষ্টার করুনা হোক বাংলাদেশ ও সমগ্র মানবমন্ডলীর জন্য – বলুন,
এক দলীয় অযৌক্তিক মতবাদ ‘জয় বাংলা’ নয়।
রাষ্ট্রীয় স্লোগান হিসেবে ‘জয় বাংলা’ এর পরিবর্তে ‘জয় বাংলাদেশ বা উপরোক্ত যে কোনো সর্বজনীন শুভ কামনামূলক যে কোনো একটা গ্রহণ করার জন্য জনগণের প্রতি ও সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব, বাংলাদেশ এর পক্ষে বিশেষ কিছু যৌক্তিক পয়েন্ট তুলে ধরে আবেদন জানিয়ে বলেন,
১. বাংলা বলতে বাংলাদেশ বুঝায় না।
২. এই রাষ্ট্রের নাম বাংলাদেশ, এই রাষ্ট্রের নাম বাংলা নয়।
৩. বাংলা বললে রাষ্ট্র বাংলাদেশ বুঝায় না।
৪. বাংলা একটা ভাষার নাম, রাষ্ট্রের নাম নয়।
৫. এটা চাপিয়ে দিলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নাম ও চরিত্র ধ্বংস হয়ে যাবে।
৬. বাংলা ভাষায় কথা ইন্ডিয়া তথা পশ্চিম বাংলা ও অনেক দেশে বলে।
৭. বাংলাদেশের জয় চাইলে জয় বাংলাদেশ বলতে হবে।
৮. জয় বাংলা একটা মতবাদ প্রতিফলন ঘটায়।
৯. বর্তমান প্রেক্ষাপটে জয় বাংলা স্লোগান বাংলাদেশ বা বাংলা ভাষাও বুঝায় না, সরাসরি আওয়ামী লীগ বুঝায়।
১০. “জয় বাংলা” এটা একটা উগ্র জাতীয়তাবাদ, যা মানবিক ভ্রাতৃত্ব নষ্ট করে মানুষেরর মধ্যে বর্ণবাদি বিদ্বেষ ও ভাষাগত সাম্প্রদায়িকতা তৈরি করে।
১১. বাংলাদেশে বহু মতপথ ও বহু ভাষাভাষি লোক বাস করে।
১২. এটা চাপিয়ে দিলে সংবিধান বিরোধী হয়ে যাবে, কারণ সংবিধান মোতাবেক রাষ্ট্র এক দলীয় বা এক মতবাদ বা এক ভাষা ভিত্তিক নয়।
১৩. এটা জনগনের উপর চাপিয়ে দিলে গণতন্ত্র বিরোধী হয়ে দাড়াবে।
১৪. এটা রাষ্ট্রের উপর চাপিয়ে দিলে রাষ্ট্রবিরোধী হয়ে দাড়াবে।
১৫. এটা চাপিয়ে দিলে সবার বিশ্বাসের উপর আঘাত ও
অধিকার লঙ্ঘন এবং মানবাধিকার হরণ হয়ে যাবে।
১৬. এটা রাষ্ট্র ও জনগণের উপর দলীয় মতবাদ চাপিয়ে দেওয়া।
১৭. এটা একটা দলীয় মতবাদের স্লোগান, যা দলের বাইরে বা অন্য দলের মানুষের উপর জবরদস্তি চাপিয়ে দেয়া ভয়ংকর অন্যায় ও জীবনের স্বাধীনতা বিধ্বংসী স্বৈরতা।
১৮. এটা সর্বজনীন নয়, রাষ্ট্রীয়ও নয়।
১৯. দলীয় সংঘাত ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসে ব্যবহারের কারণে জনগণ এই স্লোগানে আতংক বোধ করে।
২০. একক গোষ্ঠীবাদি রাজনৈতিক চেতনার প্রতিফলনের কারণে দেশের অধিকাংশ জনগণ এই দলীয় স্লোগান প্রত্যাখ্যান করে।
২১. দেশের শতাধিক রাজনৈতিক দলের একটা দল ব্যতিরেকে কেউ এই স্লোগান ব্যবহার করে না।
২২. এটি কেবল একটা দলের মতবাদ প্রতিফলিত করে এবং এই স্লোগান শুনলে জনগণ ঐ দলের অনুষ্ঠান বা নির্বাচনী স্লোগান মনে করে।
২৩. এটা চাপিয়ে দিলে রাষ্ট্র স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে যাবে।
২৪. এই স্লোগান বাধ্যতামূলক করা হলে জনগণের মতপথের স্বাধীনতা রূদ্ধ হবে এবং অন্য সকল মতপথের অস্তিত্ব বিনষ্ট হবে।
২৫. এটা বাধ্যতামূলক চাপিয়ে দিলে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জীবনের মুক্তির স্বপ্ন ও চেতনা এবং জীবনের স্বাধীনতার চেতনা ও একক গোষ্ঠী বা একক মতপথের স্বৈরতামুক্ত বহুমাত্রিক রাষ্ট্রের লক্ষ্য নস্যাৎ হয়ে যাবে।
২৬. আদালতের মাধ্যমে এটা চাপিয়ে দিলে ন্যায় বিচার লঙ্ঘিত হবে এবং আদালতের উপর জনগনের আস্থা ও আদালতের দল-নিরপেক্ষ মর্যাদা বিনষ্ট হবে।
দলীয় মতবাদের স্লোগান রাষ্ট্রীয় স্লোগান ঘোষণা করা অন্যায়, অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক যা যেই বলুক জনগণ কখনোই মানবেন না। দলীয় মতবাদের স্লোগান রাষ্ট্রীয় স্লোগান ঘোষণা করা রাষ্ট্রকে দলীয় গোষ্ঠীবাদি গোষ্ঠীকরণ করা যা সংবিধান পরিপন্থী। বিভিন্ন দ্বন্দ্ব সংঘাত ও বিরোধী পক্ষের উপর সন্ত্রাসী হামলায় ব্যবহারের মাধ্যমে জয় বাংলা ইদানিং ভয়ংকর আতংকজনক স্লোগানে পরিণত করা হয়েছে। জয় বাংলা নয়, জয় বাংলাদেশ বলুন; গোষ্ঠীবাদি স্বৈরতা থেকে জনগণের স্বাধীন অস্তিত্ব ও রাষ্ট্রের মানবিক গণতান্ত্রিক চরিত্র রক্ষা করুন।
স্রষ্টা এক ধর্ম এক দেশ এক গোষ্ঠীর নয়,সবার সব মানুষের । স্রষ্টার করুনা কামনার চেয়ে শ্রেষ্ঠ ও কল্যাণময় কোনো শ্লোগান আর কিছুই হতে পারেনা। স্রষ্টার নাম ছাড়া সব ই আসলে অর্থহীন অসার শব্দ মাত্র।
রাষ্ট্রীয় মূল শ্লোগান হিসেবে ইনসানিয়াত বিপ্লবের প্রস্তাব-
দয়াময় স্রষ্টার করুণাধন্য হোক বাংলাদেশ ও সকল দেশ সকল মানুষ
May kind Allah bless Bangladesh & mankind all.
Leave a Reply