প্রতিবেদক : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সকল জটিলতা কাটিয়ে আগামী ২১ ডিসেম্বর শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)-এর নির্বাচন। পূর্ব নির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করেছেন সংগঠনের শীর্ষ নেতা আব্দুল হক।
শুক্রবার বিকেলে নয়াপল্টনে এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল হক বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উভয় পক্ষের শুনানি নিষ্পত্তি করে এবং নির্বাচনের অন্তরায় হিসেবে জারি করা পত্রটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পুলক কুমার মণ্ডল স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এতে বলা হয়েছে, “২৬.০০.০০০০.১৫৭.৩৩.০৪১.৯২.৮১৫ নম্বর স্মারকের পত্রটি নির্দেশক্রমে প্রত্যাহার করা হলো।”
আব্দুল হক বলেন, “একটি মহল অসৎ উদ্দেশ্যে সংগঠনের গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করার চেষ্টা করেছিল। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঠিক সিদ্ধান্ত এবং শুনানি নিষ্পত্তির মাধ্যমে আমরা সকল বাধা কাটিয়ে উঠেছি। শনিবার নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে।”
উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে ব্যবসায়িক নেতা আব্দুল হক বলেন,”আপনারা অবহিত আছেন যে, রিকন্ডিশন্ড গাড়ি সেক্টরে রয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ এবং বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। সর্বোপরি প্রতিবছর কয়েকহাজার কোটি টাকা রাজস্ব প্রদানের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এ খাত। জাতীয় বাজেট প্রনয়নেও এখাতের পরামর্শ সরকার গ্রহন করে থাকে। ফলে এখাতে দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা জরুরী। সরকার প্রশাসন এবং মহামান্য উচ্চ আদালত বিষয়টি সদয় উপলব্ধি করেছেন এবং সে নিরিখে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
পাহাড়সম বাঁধা, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে নির্বাচনের পথকে বানচাল করার অপচেষ্টা চালিয়েছে কতিপয় মহল। তাদের চক্রান্তের মধ্যে ছিল বহুবিধ কৌশল, ষড়যন্ত্র, দুরভিসন্ধিমূলক অপপ্রচার, কুৎসা রটনা, মিথ্যার আশ্রয়, নেতৃস্থানীয় প্রার্থীদের অপমান অপদস্থ করা, মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা ইত্যাদি। একের পর এক মামলা ঠুকে দিয়েছে নির্বাচন বিরোধী এক অপশক্তি।
আপনারা জেনে বিস্মিত হবেন যে, আমার সহযোগী প্রার্থী জনাব রিয়াজ রহমানকে হত্যা মামলার আসামী করা হয়েছে।, আলহামদুলিল্লাহ তিনি এখন মামলা থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন। বারভিডার বর্তমান কমিটি, নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড, নির্বাচন আপিল বোর্ড, সবাইকে পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা-ফ্যাসিবাদের সহযোগি তকমা দেয়া হয়েছে। বারভিডার বর্তমান কমিটি বাতিল, নির্বাচন বোর্ড বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ চেয়ে সরকারের নিকট আবেদন করা হয়েছিল। উচ্চআদালতে ৫টি রিট মামলা করা হয়েছে। সবগুলোতে আমরা জয়লাভ করেছি। আমাকে এবং আর এক সহকর্মী আনিস সাহেবকে মিথ্যা অভিযোগ এনে নির্বাচনে অংশগ্রহনের অযোগ্য ঘোষনা করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। অথচ এসবই ছিল বহুপুরনো মিমাংসিত বিষয়। এই অশুভচক্র বারভিডায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার সাহস না পেয়ে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ায় এবং তাদের মদদদাতা অর্থ দাতা মহলের সাথে সিন্ডিকেট করে নির্বাচন বানচালের প্রকল্প নিয়ে বহুমুখি প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে। এই অপরাধী চক্রের ভয়ংকর দূরভিসন্ধির লক্ষ্য হলো নেতৃত্ব শূন্য করে বারভিডা দখল করা।
আল্লাহর অসীম রহমত, হাজারো ব্যবসায়ীদের দোয়া এবং আপনাদের স্বতস্ফুর্ত সহযোগিতা এবং ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে আমরা এই ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করতে সক্ষম হয়েছি এবং সর্বশেষ বাঁধা বাণিজ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক আরোপিত নিষেধাজ্ঞা সরকার প্রত্যাহার করলে ২১ ডিসেম্বর পূর্ব ঘোষিত তফসীল অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব বাঁধার অবসান ঘটে। ইনশায়াল্লাহ্ আগামীকাল ২১ ডিসেম্বর বারভিডার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সংগঠনের নেতারা এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে বারভিডার অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
নির্বাচনের খবর পেয়ে শত শত সদস্য নয়াপল্টনের হক্স বে সেন্টারে ভিড় জমিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। উপস্থিত সদস্যরা আশা প্রকাশ করেন, নির্ধারিত দিনে তারা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।
শনিবারের নির্বাচনকে ঘিরে সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক চর্চার একটি উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
Leave a Reply